শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ করে তাদের সুস্থ জীবন নিশ্চিত করতে অভিভাবকদের ‘গুড প্যারেন্টিং’ জোরদার করার তাগিদ দিয়েছেন সরকারি এবং বেসরকারি নীতি-নির্ধারকেরা।
বুধবার (১০ আগস্ট) বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) আয়োজিত ‘Scoping Study of Child Vulnerability In Rural And Urban Areas In Bangladesh’ শীর্ষক ফলোআপ সভায় এই তাগিদ দেওয়া হয়।
এমজেএফ কার্যালয়ে আয়োজিত ওই সভায় উপজেলা শিশু কল্যাণ বোর্ড আরো কার্যকরী করার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিশুর সুরক্ষাবিষয়ক প্রচারণা বৃদ্ধির ওপর জোরদারের সুপারিশ করা হয়।
এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিশুবান্ধব করার পাশাপাশি শিশুরা যেন যেকোনো প্রয়োজনে সরকারি হটলাইন ১০৯৮ নম্বরে নির্ভয়ে কথা বলতে পারে সেবিষয়েও আলোকপাত করা হয়।
সভায় অংশ নেওয়া কর্মকর্তা এবং বিশিষ্টজনেরা বলেন, ‘প্রযুক্তির এই যুগে টিকটক, লাইকিসহ অন্য অ্যাপ ব্যবহার করার ক্ষেত্রে শিশুদের আগে থেকে সুনির্দিষ্ট প্রশিক্ষণ বা ধারণা দেওয়া হলে বিপথে যাওয়া থেকে রক্ষা পাবে।’
স্কুলে শিশুদের সঙ্গে শিক্ষকেরা কীভাবে কথা বলবেন, কেমন আচরণ করবেন এসংক্রান্ত শিখন গাইডলাইন বা নীতিমালার কথা উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, ‘প্রত্যেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই নীতিমালার প্রয়োজন রয়েছে।’
সভায় শিশু সুরক্ষার জন্য পরিবারের ভূমিকাকে সর্বপ্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মত দেন আলোচকেরা।
সভায় উপস্থিত ছিলেন সমাজ সেবা অধিদপ্তরের সহকারী প্রকল্প পরিচালক আমরান খান এবং একই অধিদপ্তরের সহকারী প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশিদ।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার মধ্যে ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স, সিপিডিসহ বেশকিছু সংগঠনের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
এমজেএফ-এর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনামের সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রাফেজা শাহীন।
গুড প্যারেন্টিং: বাংলায় ‘প্যারেন্টিং’বা ‘গুড প্যারেন্টহুড’শব্দের সঠিক প্রতিশব্দ পাওয়া যায় না। প্যারেন্টিং হলো একজন পিতা বা মাতা হিসেবে শিশুর শারীরিক, মানসিকসহ সার্বিক বিকাশের দিকে লক্ষ্য রাখা এবং সেই অনুযায়ী তাকে বেড়ে উঠতে সাহায্য করা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সন্তান জন্মদান আর সন্তান লালন-পালন এক জিনিস নয়। আমরা সাধারণত সন্তানের শারীরিক স্বাস্থ্যটাকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকি, শিশুর মানসিক সুস্থতার দিকে গুরুত্ব কমই দেই। স্কুল থেকে শুরু করে প্রতিবেশী কিংবা আত্মীয়-স্বজনদের কাছে শিশু কেমন আচরণের মুখোমুখি হচ্ছে-এগুলো খেয়াল রাখাও ‘গুড প্যারেন্টিংয়ের’ গুরুত্বপূর্ণ অংশ।