নানা বয়সীদের মাঝে ডায়াবেটিসের সমস্যা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। অনিয়মিত জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাসের কারণেই দীর্ঘস্থায়ী এ ব্যাধিতে ভুগতে হয়। বর্তমানে কর্মব্যস্ত জীবনে অনেকের খাদ্যাভ্যাস মেনে চলার সময় থাকে না। আবার অনেকে ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয়ে সকালের নাশতা করছেন না! কিংবা দেরিতে অল্প করে নাশতা খাচ্ছেন! একসময় এটা অভ্যাসে পরিণত হয়। আর এ অভ্যাস ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।
যারা খুব সকালে ঘুম থেকে ওঠে। ব্যায়াম করে, ঠিক সময়ের নাশতা করেন, তাদের শরীরে রোগ সহজে বাসা বাঁধে না। রাতে অনেকে ঘুমান দেরিতে, এ কারণে সকালে দেরিতে উঠেন ঘুম থেকে। ফলে তড়িঘড়ি করে অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে যান তারা। এতে সকালের নাশতা করা আর হয় ওঠে না। কিন্তু এর ফলে ডেকে আনছেন বিপদ।
শরীরের ইনসুলিনের ভারসাম্যহীনতায় রক্তে শর্করার মাত্রা অস্বাভাবিক হয়ে ডায়াবেটিসের সৃষ্টি হয়।
গবেষণায় বলছে,সকালে নিয়মিত হাঁটাহাঁটিসহ নাশতা ঠিক মত করলে রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। এমনকি, এই অভ্যাসে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও কম থাকে।
শিকাগোর নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের এক সমীক্ষা অনুযায়ী, দিনের মধ্যে খাওয়ার সময়টি যারা মাত্র ১০ ঘণ্টা বা তার কম সময়ে বেঁধে ফেলেছেন (সকাল ৮ থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খাওয়া-সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খাওয়া) এবং বাকি সময়ে কোনো খাবার খান না, তাদের রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। এতে তাদের টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
প্রায় ১০ হাজার পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির ওপর সমীক্ষাটি করা হয়। তাদের গবেষণায় আরও দেখা গেছে, যারা সকালে সাড়ে ৮টার আগে নাশতা করেন, অন্যদের তুলনায় তাদের রক্তে শর্করার মাত্রাও কম থাকে।
পরিণত বয়স থেকে কিছু অভ্যাস তৈরি করতে পারলে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমে অনেকটাই।
সকাল সাড়ে ৮টার আগে নাশতা করলে মিলবে অনেক উপকার। ইনসুলিনের মাত্রাও থাকবে নিয়ন্ত্রণে। কাজেই শরীর সুস্থ রাখতে নাশতা কী খাচ্ছেন, সেটা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই কখন খাচ্ছেন তা-ও ভীষণ জরুরি।
পুষ্টিবিদরা সাধারণত ভারী নাশতা করার পরমার্শ দেন। ডায়াবেটিসের ঝুঁকি এড়াতে সুজি, ডালিয়া, ওটস জাতীয় খাবার খাওয়া যেতে পারে। ডিমও রাখতে পারেন সকালের খাদ্যতালিকায়।
