রাজধানী ও এর আশেপাশের নারায়ণগঞ্জ, সাভার গাজীপুর মিলিয়ে শতাধিক ভবন অগ্নি-ঝুঁকিতে রয়েছে।
নগর পরিকল্পনাবিদরা এ জন্য অপরিকল্পিত নগরায়ণ, আইন না মানার প্রবণতা ও কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দুষছেন। আগুনের ভয়াবহতা কিংবা ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক ও মানুষের সৃষ্টিকরা দুর্যোগ থেকে রেহাই পেতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তপক্ষসহ (রাজউক)সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরকে আরো সমন্বিতভাবে কাজ করার তাগিদ দিয়েছেন তারা।
ফায়ার সার্ভিসের উন্নয়নের পাশাপাশি রাজউককে দুর্নীতিমুক্ত করে রাজধানীকে ঘিরে যে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়ে তা দ্রুত বাস্তবায়নের পরামর্শ তাদের।
গত পাঁচ বছরে রাজধানীসহ সারাদেশে প্রায় ৯০ হাজার ছোটবড় অগ্নি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন সাড়ে তিনশো মানুষ। আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ২ হাজার কোটি টাকার বেশী। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বলছে, রাজধানীর ৮৫ শতাংশ ভবনই অগ্নি দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে রয়েছে।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি চকবাজারের চুরিহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডে ঝরে যায় ৭১ জনের তাজা প্রাণ। এর রেশ কাটতে না কাটতেই ২৮ মার্চ বনানীতে এফআর টাওয়ারে আগুনে মারা যান আরো ২৬ জন। এরপর গুলশান ডিএনসিসি মার্কেট তারপর খিলগাঁও কাঁচাবাজার পুড়ে যায় আগুনে।
দুর্ঘটনার পর তদন্তে কমিটি হলেও শেষ পর্যন্ত কোনো কার্যকর ফলাফল এসেছে এমন নজীর নেই বলে মন্তব্য করেছেন স্থপতি ইকবাল হাবিব।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বলছে রাজধানীতে অর্ধশতাধিক ভবন অগ্নি ঝুঁকিতে রয়েছে। অতিমাত্রায় ঝুঁকিতে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, সাভার গাজীপুরেও ভবন রয়েছে।
সংস্থাটির সাবেক মহাপরিচালক মুজাহিদ মুনির জানান, নিমতলীর পর চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ড বড় ধরনের অভিজ্ঞতা এনে দিয়েছে।
এখান থেকেই রাজধানীকে নিরাপদ রাখতে জানান ফায়ার সার্ভিসের পরিকল্পনার কথা।
সেজন্য ফায়ার সার্ভিসকে ঢেলে সাজানোর কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। বর্তমান যে সক্ষমতা রয়েছে, তা আরো বৃদ্ধির পাশাপাশি গবেষণা, লোকবল বৃদ্ধিসহ স্টেশন সংখ্যাও বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
নগর পরিকল্পনাবিদদের মতে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে রাজধানীকে কেন্দ্র করে যে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে তা দ্রুতই পাস করে বাস্তবায়ন করা উচিৎ।
একই সঙ্গে এ ধরনের দুর্ঘটনার পেছনে দায়ীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও পরামর্শ দিয়েছেন তারা।